
হেয়ার কেয়ার রুটিন শুনলে প্রথমেই মাথায় আসে প্রতিদিন ঘণ্টার পর ঘণ্টা চুলের পেছনে টাইম দেয়া! আবার অনেকেই ভাবে হেলদি চুলের ফার্স্ট কন্ডিশন রেগুলার স্যালন ট্রিটমেন্ট ও এক্সপেন্সিভ সব হেয়ার প্রোডাক্ট । আমি জানি বিজি লাইফস্টাইলে চুলের জন্য এতো টাইম অথবা এতো টাকা ইনভেস্ট করা অনেকের পক্ষেই পসিবল না।
কিন্তু বাইরের ডার্ট, পলিউশন, সান হিটসহ হাজারটা কারণে তোমার হেয়ার ড্যামেজ হচ্ছে প্রতিদিন! এক উইকে চুল হাইড্রেটেড, প্রোপারলি ময়েশ্চার্ড ও হেল্দি, আবার পরের উইকেই লাইফলেস, ফ্রিজি ও ড্যামেজড!
এই প্রবলেমের সলিউশন কী?
সলিউশন একটাই, “প্রপার হেয়ার কেয়ার রুটিন”! উহু, ভয় পাওয়ার কিচ্ছু নেই, তোমার চুল খুব বেশি অ্যাটেনশন চায় না। রেগুলার একটু কেয়ারেই তুমি পেতে পারো ঝলমলে চুল! আজকে তোমার জন্য নিয়ে এসেছি একটি উইকলি ন্যাচারাল হেয়ার কেয়ার রুটিন। খুব বেশি টাইম ও টাকা ইনভেস্ট না করেও তুমি মেইনটেন করতে পারো ন্যাচারালি সুন্দর, ড্যামেজ ফ্রি ও হেল্দি হেয়ার।
প্রয়োজনের বেশি শ্যাম্পু একদম না!
কেউ বলছে প্রতিদিন শ্যাম্পু করো, আবার কেউ বলছে সপ্তাহে ১-২ দিন! কনফিউশন, রাইট?
তোমার কনফিউশন দূর হয়ে যাবে এখনই। কারণ শ্যাম্পুর ফ্রিকোয়েন্সি ডিপেন্ড করে তোমার চুলের টাইপ ও লাইফস্টাইলের ওপর। নরমাল বা ড্রাই চুলে ৩ দিন পরপর শ্যাম্পু করাই যথেষ্ট। কিন্তু চুল অতিরিক্ত অয়েলি হলে ১ দিন পরপর শ্যাম্পু করতে হবে। আর তোমাকে যদি প্রতিদিন ধুলোবালিতে বের হতে হয়, তাহলে ১ দিন পরপর শ্যাম্পু মাস্ট।
কিন্তু অনেক সময় তাড়াহুড়ায় রেগুলার শ্যাম্পু করাটা একটু ডিফিকাল্ট হতে পারে। তাই সলিউশন হিসেবে তুমি ড্রাই শ্যাম্পু ইউজ করতে পারো। টেনশন করার কিছু নেই! এখনই তোমাকে ড্রাই শ্যাম্পুর পেছনে টাকা ইনভেস্ট করতে হবে না। খুব সহজে তুমি নিজেই তোমার ড্রাই শ্যাম্পু বানিয়ে নিতে পারো।
যা যা লাগবে:
- দারুচিনি পাউডার ২ টেবিল চামচ
- কর্নস্টার্চ ২ টেবিল চামচ
- ল্যাভেন্ডার অয়েল ১ টেবিল চামচ
প্রথমে দারুচিনি পাউডার ও কর্নস্টার্চ ভালোমতো মিক্স করে নাও। এবার এতে ল্যাভেন্ডার অয়েল অ্যাড করে আবার ভালোমতো মিক্স করো। তোমার ড্রাই শ্যাম্পু রেডি!
এই ড্রাই শ্যাম্পু অ্যাপ্লাই করাও অনেক সহজ। প্রথমে মেকআপ ব্রাশ দিয়ে চুলে অ্যাপ্লাই করে নাও। তারপর আঙুল দিয়ে চুলের গোড়ায় ম্যাসাজ করো। ৫-১০ মিনিট পর চুল ভালোভাবে ব্রাশ করে নাও এতে অতিরিক্ত পাউডার রিমুভ হয়ে যাবে।
কন্ডিশনিং 101
শ্যাম্পু করার পর কন্ডিশনার অ্যাপ্লাই করলে চুলের ফ্রিজিনেস ও রাফনেস দূর হয় এবং স্মুদ ও সফ্ট থাকে। এছাড়াও কন্ডিশনার চুল জটমুক্ত রাখতে হেল্প করে তাই আঁচড়ানোর সময় চুল ভেঙে যাওয়ার চান্স অনেক কমে যায়। তবে কন্ডিশনার কখনোই স্কাল্পে অ্যাপ্লাই করা উচিত না। এতে স্কাল্প অতিরিক্ত অয়েলি হয়ে যায়। তাই কন্ডিশনার সবসময় চুলের মাঝামাঝি লেন্থ থেকে শেষ পর্যন্ত অ্যাপ্লাই করা উচিত।
প্রতিবার ভেজানোর পর চুল শুকাতে হবে খুব ভালোভাবে
চুল ভেজানোর দরকার হলে খুব ভালোমতো শুকিয়ে নিবে। ভেজা চুল বাঁধলে ব্যাকটেরিয়াল ও ফাঙ্গাল ইনফেকশন হতে পারে। যতটা পসিবল কোল্ড ড্রায়ার ইউজ করার ট্রাই করো। এছাড়া টেবিল ফ্যানেও চুল শুকাতে পারো।
ন্যাচারাল হেয়ার মাস্ক
তোমার হেয়ার কেয়ার রুটিনে প্রতি উইকে এই ন্যাচারাল হেয়ার মাস্ক অ্যাপ্লাই করতে ট্রাই করো। এই মাস্ক চুলের ফ্রিজিনেস ও ড্যামেজ দূর করে তোমাকে সফ্ট ও হেল্দি চুল পেতে হেল্প করবে।
যা যা লাগবে:
- কলা ১টি
- টক দই ২ টেবিল চামচ
- মধু ১ টেবিল চামচ
সব ইনগ্রেডিয়েন্টস একসাথে ভালোমতো ব্লেন্ড করে নাও। সম্পূর্ণ চুলে মাস্কটি অ্যাপ্লাই করো। ৩০-৪৫ মিনিট পর শ্যাম্পু করে কন্ডিশনার অ্যাপ্লাই করতে হবে।
রেগুলার অয়েল ম্যাসাজ
চুলের ডিপ কন্ডিশনিং ও চুলপড়া কমাতে তোমার হেয়ার কেয়ার রুটিনে অয়েল ম্যাসাজ মোস্ট ইম্পর্ট্যান্ট! রেগুলার অয়েল ম্যাসাজ স্কাল্পের ব্লাড সার্কুলেশন ও অক্সিজেন সাপ্লাই বাড়িয়ে হেয়ার রুট শক্ত করে এবং হেয়ার ফল কমায়। তাই প্রতি উইকে অন্তত ২ দিন কোকোনাট, অলিভ বা অন্য কোনো হেয়ার অয়েল স্কাল্পে ম্যাসাজ করতে পারো।
প্রপার হেয়ার ম্যাসাজ স্টেপ জানতে এই ভিডিওটি তোমাকে খুব হেল্প করবে।
রেগুলার ট্রিমিং
অনেকেই চুলের লেন্থ লম্বা করতে গিয়ে চুল ট্রিম করে না। যার ফলে চুলের আগা ফাটে ও চুল ভেঙে যায়। তাই হেলদি ও ড্যামেজ ফ্রি চুলের জন্য প্রতি ২-৩ মাস পরপর রেগুলার হেয়ার ট্রিম করাটা খুবই জরুরি! আর চুল হেল্দি থাকলে গ্রোথও দ্রুত হয়।
যারা চুলের জন্যে ন্যাচারাল সলিউশন খুঁজছো, তারা DOVE Coneflower Extract Shampoo and Conditioner ট্রাই করতে পারো। এর ন্যাচারাল ইনগ্রেডিয়েন্ট যেমন Coneflower, Oil এবং White Tea চুলের ড্যামেজ প্রোটেক্ট করতে এবং চুলপড়া কমাতে অনেক হেল্প করে।
ন্যাচারালি ড্যামেজ ফ্রি ও হেল্দি হেয়ার পেতে খুব একটা কষ্ট করার দরকার নেই! জাস্ট একটা হেয়ার রুটিন রেগুলার ফলো করো আর তোমার কোনো হেয়ার প্রবলেমের সলিউশন পেতে আমাদের কমেন্ট করে জানাও।