ড্রাইনেস্! আমাদের সবচেয়ে কমন হেয়ার প্রবলেমগুলোর মধ্যে একটি। প্রতিদিন সকালে ঘুম থেকে উঠে ড্রাই, রাফ্ ও ফ্রিজি চুল দেখে মন খারাপ শুরু হয়! আর সারাদিন ধরে চলতে থাকে চুল নিয়ে স্ট্রাগল। তোমারও যদি নিজের চুল নিয়ে এমন ফিল হয়, তাহলে আপসেট না হয়ে ট্রাই করো চুলের যত্ন নেওয়ার সহজ কিছু উপায়। ট্রাস্ট মি, একটু প্রোপার টেক কেয়ার করে তুমি চুলকে করতে পারো হেলদি ও ময়েশ্চারাইজড।
কিন্তু তার আগে চলো জেনে নেই চুল কেন ড্রাই হয়। অনেক কারণেই আমাদের চুল ড্রাই হতে পারে যেমন; ভুল হেয়ার কেয়ার প্রোডাক্ট, রেগুলার ব্লো ড্রাই, হিট স্টাইলিং, সূর্যের ক্ষতিকর UV Rays ইত্যাদি। এগুলোর মধ্যে একটির বেশি অথবা সবগুলোতেই যদি তোমার চুল এক্সপোসড হয়ে থাকে তাহলে চুল হতে পারে অত্যন্ত ড্রাই।
চুল ড্রাই হওয়ার কারণ তো জানলে, এবার জেনে নাও কীভাবে একটা সহজ রুটিনে তোমার ড্রাই হেয়ার হয়ে উঠবে সফ্ট ও স্মুদ!
শুরুটা হোক ফ্রেশ চুলে
শুরুতেই ফ্রেশ লুকের জন্য ভালোভাবে চুল ট্রিম করে নাও। কারণ চুল অতিরিক্ত ড্রাই হলে অনেকেরই আগা ফেটে যায়। আর এই ফাটা আগার কারণে চুল স্টাইল করাটা যেমন কঠিন হয় তেমনি এর কারণে চুলকে আরও কোর্স ও ড্যামেজড মনে হয়। তাই ফ্রেশ লুক এবং হেল্দি গ্রোথের জন্য সবার আগে প্রোপার ট্রিমিং খুবই ইম্পর্ট্যান্ট।
শ্যাম্পু করতে হবে সঠিক নিয়ম মেনে
অতিরিক্ত শ্যাম্পু আমাদের স্কাল্পের সিবাম অর্থাৎ ন্যাচারাল অয়েল নষ্ট করে দেয়। চুলের ন্যাচারাল শাইনের জন্য সঠিক পরিমাণ সিবাম খুবই ইম্পর্ট্যান্ট। তাই যাদের প্রতিদিন শ্যাম্পু করার অভ্যাস তাদের জন্য আমার সাজেশন হলো, একদিন পরপর শ্যাম্পু করা। আর চুল সফ্ট ও ময়েশ্চারাইজড রাখতে শ্যাম্পু করার পর কন্ডিশনার অ্যাপ্লাই করতে হবে। এমন একটা শ্যাম্পু সিলেক্ট করো যা ড্রাই চুলের জন্য স্পেশালাইজড এবং চুলের ন্যাচারাল অয়েল নষ্ট করবে না। ড্রাই চুলের জন্য Tresemme Botanique Nourish and Replenish Shampoo & Conditioner চমৎকার সিলেকশন হতে পারে! কারণ এর ন্যাচারাল অয়েলযুক্ত ফর্মুলা চুলকে জেন্ট্লি (gently) ক্লিন করে নারিশ্ড ও সফ্ট রাখতে হেল্প করে। এমনকি যাদের চুল কালার করা তাদের জন্যেও শ্যাম্পুটি একদম সেইফ।
কমাতে হবে হিট স্টাইলিং
চুলে কার্ল, স্ট্রেইট বা ভলিউম আনতে তুমি যদি প্রতিদিন হিট স্টাইলিং-এর উপর ডিপেন্ড করো তাহলে তা এখনই কমাতে হবে। কারন এসব হিট স্টাইলিং চুল ড্রাই হওয়ার অন্যতম কারণ। আর ভেজা চুল শুকাতে যদি ব্লো ড্রাই করতেই হয় তবে খেয়াল রাখো তা যেন মাঝামাঝি বা একদম কম হিটে থাকে। চুল থেকে ড্রায়ারে মিনিমাম ৬ ইঞ্চি দূরত্ব রাখতে ট্রাই করো, এতে হেয়ার ড্যামেজ কিছুটা হলেও কমানো সম্ভব।
এড়িয়ে চলতে হবে গরম পানি
তোমার চুলের ড্রাইনেস কমিয়ে হেল্দি ও স্মুদ রাখতে যতোটা সম্ভব গরম পানি এড়িয়ে চলতে হবে। কারণ অতিরিক্ত গরম পানি চুলের এসেনশিয়াল অয়েল নষ্ট করে আরও ড্রাই করে ফেলে। তাই হালকা গরম বা ঠান্ডা পানি ইউজ করতে ট্রাই করো।
চুল বাঁচাও রোদ থেকে
সূর্যের ক্ষতিকর UV Rays আমাদের স্কিনের জন্য যেমন ক্ষতিকর তেমনি চুলের জন্যেও ক্ষতিকর। তাই রোদে বের হওয়ার আগে স্কার্ফ, হ্যাট এসব ইউজ করতে ট্রাই করো। চুলের সান ড্যামেজ কমাতে অ্যালোভেরা জেল ট্রাই করতে পারো। অ্যালোভেরার কুলিং প্রোপারটি এবং কোলাজেন সান ড্যামেজ কমাতে খুবই হেল্পফুল। এছাড়াও সান এবং হিট ড্যামেজ রিপেয়ার করতে কোকোনাট অয়েলও অনেক ভালো কাজ করে। প্রতি সপ্তাহে একদিন কোকোনাট অয়েল ম্যাসাজ করো, এটি তোমার চুলে ডিপ কন্ডিশনিং ট্রিটমেন্ট হিসেবে কাজ করবে।
আস্থা রাখো ন্যাচারাল হেয়ার মাস্কে
ন্যচারালি সফ্ট, স্মুদ ও হেল্দি চুল পেতে প্রতি সপ্তাহে একদিন এই মাস্ক ইউজ করতে পারো। মাস্কটি তোমার চুলের হাইড্রেটিং ট্রিটমেন্ট করে ড্রাইনেস্ কমাতে হেল্প করবে। ঘরে বসে একদম সহজেই মাস্কটি বানিয়ে নাও।
যা যা লাগবেঃ
- মধু ১ চা চামচ
- ডিম ১টি
- অ্যাপল সিডার ভিনেগার ১ টেবিল চামচ
ডিম ভালো মতো বিট করে এতে মধু এবং ভিনেগার মিক্স করে নাও। তোমার চুলের লেন্থের উপর ডিপেন্ড করে ইনগ্রেডিয়েন্টের পরিমাণ অর্ধেক বা দ্বিগুণ হতে পারে। এবার চুলে অ্যাপ্লাই করো এবং ৩০-৪০ মিনিট পর ধুয়ে ফেল। ডিম একটি অসাধারণ কন্ডিশনার যা তোমার চুলকে নারিশ করার পাশাপাশি হেয়ার গ্রোথে ও ড্যামেজ কন্ট্রোল করতে সাহায্য করে। ডিমের বিভিন্ন নিউট্রিয়েন্ট নিষ্প্রাণ চুলে এনে দেয় গ্লস ও সাইন।
দেখলে তো? ড্রাই চুল সফ্ট ও স্মুদ করা খুব একটা কঠিন কাজ না। শুধু দরকার একটু টেক কেয়ার আর ভালোবাসা। আজকে থেকেই ভালোবাসা ও অ্যাটেনশন নিয়ে এই রুটিন ফলো করা শুরু করে দাও। আর ড্রাইনেসকে বিদায় জানাও সহজেই!