প্রাণবন্ত কার্লি চুলের জন্যে ৫টি সহজ টিপস!

প্রাণবন্ত কার্লি চুলের জন্যে ৫টি সহজ টিপস!

“কি সুন্দর কার্লি চুল, ইশ আমার যদি এরকম থাকতো!” চুলের এমন কমপ্লিমেন্ট শুনতে তোমার নিশ্চয়ই ভালোই লাগে!
কিন্তু যারা ন্যাচারালি কার্লি চুল নিয়ে জন্মায়, তারাই একমাত্র জানে এটি ম্যানেজ করা কতটা কঠিন। কার্লি চুলের টেক্সচার অন্যান্য চুলের চেয়ে আলাদা হয়। স্কাল্পে প্রডিউস হওয়া ন্যাচারাল অয়েল চুলের কার্ল ও কার্ভের কারণে নিচের দিকে সহজে পৌঁছাতে পারে না। এই ন্যাচারাল অয়েল আমাদের চুল ময়েশ্চারাইজড ও সফ্‌ট রাখার জন্য খুবই প্রয়োজনীয়। এসব কারণে কার্লি চুলের টেক্সচার তুলনামূলক রাফ্ হয় এবং এর জন্য এক্সট্রা হাইড্রেশন প্রয়োজন। এছাড়া কার্লি চুল সবসময় জটমুক্ত, ম্যানেজেবল রাখতে ও ফ্যাশনেবল হেয়ারস্টাইল করতেও স্ট্রাগলের শেষ নেই! তাহলে কি কার্লি চুলের মেয়েরা, স্ট্রেইট চুল দেখবে আর ফ্রাস্ট্রেশনে ভুগবে?
একদমই না! কারণ কার্লি চুল তোমার গর্জিয়াস লুকের জন্য ব্লেসিং, শুধু প্রয়োজন একটু প্রপারভাবে কেয়ার করা। আজকে আমি তোমাদের সাথে কার্লি চুলে বাউন্স, ভলিউম ও শাইন নিয়ে আসার কিছু সহজ টিপস্‌ শেয়ার করবো।

 

রেগুলার কন্ডিশনিং ট্রিটমেন্ট

যেহেতু ন্যাচারাল কার্লি চুল অনেক ড্রাই হয় এবং জটমুক্ত রাখাও বেশ কঠিন ব্যাপার, তাই রেগুলার কন্ডিশনিং ট্রিটমেন্ট তোমার চুল সফ্‌ট ও জটমুক্ত করবে। এছাড়াও এটি চুল ময়েশ্চারাইজড ও হাইড্রেটেড রাখবে।

কার্লি চুলের জন্যে শুধু শ্যাম্পু করার পরে না, শ্যাম্পুর আগেও দরকার কন্ডিশনিং। শ্যাম্পু করার আগে তোমার পছন্দমতো নারিশিং অয়েল (কোকোনাট, অলিভ, আমন্ড ইত্যাদি) নিয়ে চুলে অ্যাপ্লাই করো। অ্যাপ্লাই করার সময় চুল কয়েক ভাগে ভাগ করে নাও এবং আঙুল দিয়ে কার্লগুলো আলাদা করে নাও। এতে অয়েল তোমার সম্পূর্ণ চুলে ভালোভাবে পৌঁছাবে। একটি প্লাস্টিক ক্যাপ বা টাওয়েল দিয়ে চুল ঢেকে দিতে পারো, এতে স্কাল্পে ন্যাচারাল হিট ক্রিয়েট হয়ে চুলের কিউটিকল ওপেন করে দিবে এবং অয়েল চুলের গভীরে প্রবেশ করে কন্ডিশনিং করবে। এভাবে মিনিমাম ২০ মিনিট রেখে দাও, এরপর তোমার শ্যাম্পু প্রসেস শুরু করো।

এই প্রি শ্যাম্পু ট্রিটমেন্ট তোমার কাছে অনেক টাইম কনজিউমিং বা ঝামেলার মনে হতে পারে। কিন্তু ট্রাস্ট মি, এটি তোমার চুল জটমুক্ত ও ম্যানেজেবল রেখে লং রানে তোমার অনেক সময় বাঁচাবে!

শ্যাম্পুর পরে কন্ডিশনার ইউজ করতে ভুলবে না। কারণ শ্যাম্পু তোমার চুলের ন্যাচারাল অয়েল ধুয়ে ফেলে তাই চুলের ময়েশ্চার রিস্টোর করার জন্যে দরকার কন্ডিশনার। শ্যাম্পু ঠিকমতো ধুয়ে ফেলার পরে স্কাল্প বাদে চুলের মিডলেন্থ থেকে শেষ পর্যন্ত কন্ডিশনার অ্যাপ্লাই করো। অন্তন ৫ মিনিটের জন্যে কন্ডিশনার চুলে রাখার পরে ধুয়ে ফেলো। এছাড়াও শ্যাম্পুর পরে লিভ-ইন কন্ডিশনার ব্যবহার তোমার চুলকে ময়েশ্চারাইজড ও হাইড্রেটেড রাখতে অনেক ইফেক্টিভ।

 

চুল বাঁচাও টাওয়েল ড্যামেজ থেকে

ভেজা চুল শুকাতে অনেকেই টাওয়েল দিয়ে চুলে রাফ্‌লি ঘষে, এতে চুল ফ্রিজি ও ড্রাই হয়ে যায়। এছাড়া চুল ভেজা অবস্থায় অনেক নরম থাকে, তখন টাওয়েল দিয়ে রাফ্লি মুছলে চুল ভেঙে যাওয়ার বা ড্যামেজ হওয়ার চান্স বেশি থাকে। তাই চুল শুকানোর সময় খুবই হালকাভাবে চুলে লেগে থাকা অতিরিক্ত পানি বের করে নাও। এছাড়াও কার্লি চুলের ড্রাই ও ফ্রিজিনেস কন্ট্রোল করার জন্যে সাধারণ টাওয়েল-এর পরিবর্তে মাইক্রো-ফাইবার টাওয়েল খুবই ভালো অল্টারনেটিভ। যদি মাইক্রো-ফাইবার টাওয়েল অ্যাভেইলেবল না হয় তাহলে তাহলেও টেনশন নেই! যেকোনো কটন টিশার্ট দিয়েও ভেজা চুল হালকাভাবে মুছলে ফ্রিজ ও ড্যামেজ থেকে তোমার চুল থাকবে সেইফ!

 

ডিফিউজার বাঁচাবে ফ্রিজিনেস থেকে

কার্লি হেয়ারের জন্যে ডিফিউজার একটা ব্লেসিং-এর মতো! ডিফিউজার বেসিক্যালি হেয়ার ড্রায়ারের একটা এক্সট্রা অ্যাটাচমেন্ট টুল, যেটা বাতাসটাকে একটা বড় এরিয়া জুড়ে ছড়িয়ে দেয়। এজন্যে যখন তুমি ডিফিউজার দিয়ে চুল শুকাবে তা তোমার চুলের ন্যাচারাল কার্ল প্যাটার্নকে নষ্ট করে না।

 

5-easy-tips-for-your-lively-curls-02_optimized

 

যদি ব্লো ড্রাই করতেই হয় তাহলে ডিফিউজার ইউজ করার ট্রাই করো। কারণ, ডিফিউজার হিট সম্পূর্ণ চুলে সমানভাবে ছড়িয়ে দেয় এবং চুল ফ্রিজি হওয়ার চান্স থাকে না। তবে অতিরিক্ত হিট ড্রায়ার এড়িয়ে চলতে হবে, কারণ থার্মাল/হিট টুলস চুলের ড্যামেজ ও ভেঙে যাওয়ার জন্য দায়ী।

 

চুল আঁচড়াতে হবে সঠিন নিয়ম মেনে

কার্লি চুল আঁচড়ানোর সময় কিছু নিয়ম ফলো করতে হবে। প্রথমত, চুলের নিচে থেকে শুরু করে আস্তে আস্তে উপরের দিকে আঁচড়াতে হবে। কারণ, কার্লি চুলে জট তৈরি হওয়ার চান্স বেশি থাকে। উপর থেকে নিচের দিকে আঁচড়ালে, সব জট নিচে এসে জমা হয়। এই জট ছোটানোর জন্য চুলে অনেক প্রেশার পরে এবং সহজেই চুল ভেঙে যায়। আর চুল আঁচড়ানোর সময় আঙুল দিয়ে প্রতিটা জট আলাদা করে দিতে হবে, এতে চুলে প্রেশার ক্রিয়েট হওয়ার চান্স অনেক কমে যায়।

 

অ্যাভয়েড করো হেয়ার ব্রাশ

শুনতে অবাক লাগছে, তাই না? হ্যাঁ, কার্লি চুলে হেয়ার ব্রাশ না বরং মোটা দাঁতের চিরুনি ইউজ করতে হবে। তার কারণ, কার্লি চুল ভঙ্গুর স্বভাবের হয়, আর হেয়ার ব্রাশ ইউজ করলে হেয়ার ড্যামেজ ও চুল ভেঙে যাওয়ার চান্স থাকে। ড্যামেজ ও ব্রেকেজ অ্যাভয়েড করতে শুকনো অবস্থায় চুল আঁচড়ানো যাবে না। শ্যাম্পু করার পরে ভেজা অবস্থায় মোটা দাঁতের চিরুনি দিয়ে চুল হালকাভাবে জটমুক্ত করতে হবে। এতে ডিট্যাঙ্গেল করা ইজি হয় এবং চুলের ন্যাচারাল কার্ল প্যাটার্ন নষ্ট হওয়ার চান্স থাকে না।

 

5-easy-tips-for-your-lively-curls-03_optimized

 

সবশেষে, চুল যে টাইপেরই হোক না কেন, রেগুলার ট্রিম ছাড়া হেল্‌দি চুল মেইনটেন করা সম্ভব না! চুল হেল্‌দি, ফ্রেশ ও বাউন্সি রাখতে প্রতি ছয় থেকে আট উইক পরপর ট্রিম করে নিবে। তো, আজকে থেকেই এই টিপস্‌গুলো ফলো করা শুরু করে দাও আর তোমার ন্যাচারাল কার্লি চুল রাখো হেল্‌দি ও গর্জিয়াস!


রিলেটেড পোস্ট