প্রতিবছর সামার শুরু হওয়ার আগে আমাদের স্কিন নিয়ে টেনশন শুরু হয়। সূর্যের প্রচন্ড তাপ, হিউমিডিটি সাথে পলিউশন! আর এসব কারণে স্কিনে অতিরিক্ত অয়েল, ব্রাইটনেস কমে যাওয়া, রোদে পোড়া দাগ, খসখসে স্কিন, পিম্পলসহ হাজারটা প্রবলেম দেখা যায়। আমাদের লাইফ থেকে সামার স্কিপ করার কোনো উপায় নেই, কিন্তু কিছু সহজ টিপস ফলো করে সামারে স্কিন প্রবলেম অনেকটাই কমানো সম্ভব। চলো জেনে নেই সামারে হেলদি স্কিন পাওয়ার ৫টি সহজ টিপস!
এক্সফোলিয়েশন
সামারে স্কিন ঘেমে তুলনামূলক বেশি ময়লা জমে, সেইসাথে ডেড সেল তো আছেই। ডেড সেল ও ময়লা জমে থাকলে কোনো প্রোডাক্ট স্কিনে ভালোভাবে অ্যাবজর্ব হয় না। সামারে আরেকটি স্কিন প্রবলেম হলো ব্রাইটনেস কমে যাওয়া। তাই আমি একটি ন্যাচারাল এক্সফোলিয়েটর সাজেস্ট করবো যা এক্সফোলিয়েশনের পাশাপাশি স্কিনের গ্লো বাড়াতে হেল্প করবে।
যা যা লাগবেঃ
- অরেঞ্জ পিল পাউডার
- দুধ (মিক্স করার জন্য)
অরেঞ্জ পিল পাউডার বানাতে, কমলার খোসা ২-৩ দিন রোদে শুকিয়ে নাও। এবার পরিমাণমতো পাউডারের সাথে সাথে দুধ মিক্স করে স্মুদ পেস্ট বানাও। পেস্টটি সার্কুলার মোশনে ফেস ও বডিতে কিছুক্ষণ ম্যাসাজ করো। কুনই, হাটু ও পায়ের গোড়ালির স্কিন তুলনামূলকভাবে বেশি ড্রাই ও রাফ হয়। তাই এই অংশগুলো স্ক্রাব করার সময় বাড়তি সময় দাও। অরেঞ্জ পিল স্কিন কমপ্লেকশন ভালো রাখতে, এবং স্কিন গ্লোয়িং রাখতে অনেক হেল্পফুল।
ব্রাইটেনিং ফেস মাস্ক
সামারে স্কিনের ব্রাইটনেস ফিরিয়ে আনার ন্যাচারাল সলিউশন হিসেবে এই ফেস মাস্কটি চমৎকার কাজ করে।
যা যা লাগবে
- ১টি শসা
- ২/৩ চামচ টক দই
একটি ছোট সাইজের শশা ব্লেন্ড করে পেস্ট বানাও, এবং এতে টক দই মিশিয়ে নাও। এবার পেস্টটি ফেস এবং গলায় অ্যাপ্লাই করে সার্কুলার মোশনে কিছুক্ষণ ম্যাসাজ করো। ৫ মিনিট পর পানি দিয়ে ধুয়ে ফেলতে হবে। শশা স্কিন ঠান্ডা করতে হেল্প করে এবং স্কিনের ময়লা দূর করে বন্ধ পোরস ওপেন করে। এছাড়াও এটি স্কিনের ডালনেস ও ড্রাইনেস দূর করে স্কিনে গ্লো ফিরিয়ে আনে।
সামার ফ্রেন্ডলি প্রোডাক্ট
সামারে ভারী বা ক্রিম বেসড প্রোডাক্ট স্কিন পোরস বন্ধ করে ফেলে, আর স্কিনে পিম্পল, অ্যাকনে এসব প্রবলেম শুরু হয়।
তাই স্কিনের ন্যাচারাল ব্রিদিং নিশ্চিত করতে লাইট, নন গ্রিসি, জেল বা ওয়াটার বেসড প্রোডাক্ট ইউজ করতে ট্রাই করো। কারণ এসব প্রোডাক্ট স্কিনে তাড়াতাড়ি অ্যাবজর্ব হয়ে যায় তাই ভারী ফিল হয় না এবং পোরস বন্ধ হওয়ার চান্স থাকে না।
সামারে বডি স্কিন হাইড্রেটেড ও সফট রাখতে এবং সূর্যের ক্ষতিকর রশ্মি থেকে বাঁচাতে অবশ্যই ময়েশ্চারাইজার ব্যবহার করতে হবে। সামার বডি লোশন হিসেবে Vaseline Healthy Bright Lotion-টি সিলেক্ট করতে পারো। এই বডি লোশনে ত্রিপল সানস্ক্রিন রয়েছে, যা সান ড্যামেজ থেকে স্কিনকে বাঁচাতে হেল্প করে। আর এটি নন গ্রিসি এবং স্কিনে তাড়াতাড়ি অ্যাবজর্ব হয়ে যায়।
সানস্ক্রিন
সান ড্যামেজ থেকে বাঁচতে বাইরে বের হওয়ার আগে অবশ্যই সানস্ক্রিন অ্যাপ্লাই করতে হবে। সানস্ক্রিন সিলেক্ট করার আগে খেয়াল রাখো তা মিনিমাম SPF 30 যুক্ত কিনা। কারণ SPF 30 96% পর্যন্ত সূর্যের ক্ষতিকর রশ্মি ব্লক করে। সামারে একটু লাইট ওয়েট সানস্ক্রিন সিলেক্ট করো যা স্কিনে সহজে অ্যাবজর্ব হয়।
লিপবাম ও সানগ্লাস
আমাদের চোখের চারপাশ ও ঠোঁটের স্কিন তুলনামূলক পাতলা, তাই এর জন্য বাড়তি অ্যাটেনশন দরকার। দুপুর ১২ টা থেকে বিকেল ৪টা পর্যন্ত সূর্যের তাপ সবচেয়ে বেশি থাকে। এসময় যতটা সম্ভব রোদে বের না হতে ট্রাই করো। তবে বাইরে বের হতে হলে সানগ্লাস ও লিপবাম ব্যবহার করা উচিত। SPF যুক্ত লিপবাম হাইড্রেটেড রাখার পাশাপাশি UV rays থেকে ঠোঁটকে বাঁচাবে।
আই স্কিনের সানবার্ন কমাতে বাইরে থেকে এসে পরিষ্কার ঠান্ডা পানি দিয়ে ধুয়ে ফেলো। এছাড়াও কটন প্যাড দিয়ে চোখের নিচে আলুর রস অ্যাপ্লাই করতে পারো। কারণ আলুর রস স্কিন সুদিং-এ অনেক হেল্পফুল।
এসবের পাশাপাশি স্কিন হাইড্রেটেড রাখতে ডায়েটে পর্যাপ্ত পানি, ফ্লুয়িড ও ফ্রেশ ফ্রুটস রাখতে হবে। এই সিম্পল টিপসগুলো সামারে তোমার স্কিন প্রবলেম অনেকটাই কমিয়ে দিতে পারে।